মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। ক্ষমতাসীন দলের প্রধান অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্টসহ বেশ কয়েকজন ক্ষমতাসীন মন্ত্রীকে আটকের পর এ অবস্থা ঘােষণা করা হয়।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়, এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশের ক্ষমতা কমান্ডার-ইন-চিফ মিন অং হ্লােইংয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সােমবার দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা ঘােষণা করেছে তারা। সেই সঙ্গে একজন জেনারেলকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়ােগ দিয়েছে।
সেনাবাহিনী পরিচালিত মায়াওয়ার্দি টিভিতে জরুরি অবস্থা জারির ঘােষণা দেওয়া হয়। ওই ঘােষণায় বলা হয়েছে, মিয়ানমারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এমন পদক্ষেপ প্রয়ােজনীয় ছিল। গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ব্যাপক কারচুপির অভিযােগ তুলেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমােক্রেসির (এনএলডি) মুখপাত্র জানান, সােমবার ভােরে দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ কয়েকজন নেতাকে আটক করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর লােকজন দেশটির বিভিন্ন প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর বাসায় গিয়ে তাদের আটক করে নিয়ে গেছে বলে তাদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে।
তাদের আটক করা হয়। দলের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকেও আটক করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের মুখপাত্র মায়াে নিউনত সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, অং সান সু চি, রাষ্ট্রপতি উইন মিনত এবং অন্য শীর্ষ নেতাদের সােমবার ভােরে আটক করা হয়েছে। জনগণকে উত্তেজিত না হয়ে আইন অনুসারে প্রতিক্রিয়া দেখানাের আহ্বান জানান তিনি।
গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন। ন্যাশনাল এনএলড়ি নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। তবে ওই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযােগ তােলে দেশটির সেনাবাহিনী। এবার সেই অভিযােগেই অভিযান চালিয়ে সু চিসহ এনএলডির শীর্ষ নেতাদের আটক করা হল। ওই নির্বাচনে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলের ভােটারদের ভােট বঞ্চিত করা হয়েছে বলে বিভিন্ন মানবাধিকার গােষ্ঠী থেকে সমালােচনা করা হয়।
আর সেনাবাহিনী সমর্থিত বিরােধী জোট নির্বাচনে দাবি করে নির্বাচনে ৮.৬ মিলিয়ন ভােট জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। গত সপ্তাহে সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, নির্বাচনে প্রতারণার অভিযােগ নিয়ে মিয়ানমারে যে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে তার সমাধান না হলে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা আছে তাদের। এটি কি অভ্যুত্থান হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র ‘সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করলে উত্তেজনা চরমে পৌছায়।
আপনার মতামত জানান